Krishak Bandhu Taka: প্রতিনিয়ত কৃষক দের সুবিধার্থে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার কাজ করে যাচ্ছে, কেন্দ্র সরকারের যেরকম পিএম কিষাণ যোজনা রয়েছে সেরকমই রাজ্য সরকারের (Government of West Bengal) কৃষক বন্ধু প্রকল্প রয়েছে। বছরের সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা (Krishak Bandhu Payment) কৃষক দের মেলে এই প্রকল্প থেকে। তবে এই টাকার পরিমাণ সব কৃষকের ক্ষেত্রে সমান হয়না। কেউ কম টাকা পেয়ে থাকে কেউবা বেশি টাকা পেয়ে থাকে। আজকে এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনে নেব, কিভাবে বুঝবেন কৃষক বন্ধু প্রকল্পতে কত জমিতে কত টাকা পাবেন? কৃষক বন্ধু টাকা কবে ঢুকবে? তাছাড়াও কৃষক বন্ধু সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয়ে জানব।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ২০১৯ সালে কৃষকদের কৃষিকাজে সুবিধার্থে কৃষক বন্ধু প্রকল্প চালু কারেছেন। চালু করার সাথে সাথেই লক্ষাধিক কৃষক এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন যার সুবিধা এখনো পর্যন্ত পেয়ে চলেছে কৃষকেরা। ন্যূনতম জমি থাকলেও এই কৃষক বন্ধুতে নাম নথিভুক্ত করা যায়। তবে সেই জমিটি হতে হবে চাষযোগ্য। প্রতিবছরই দুটি কিস্তিতে কৃষক বন্ধু প্রকল্প থেকে টাকা দেওয়া হয় সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে কৃষকদের। তবে সেই টাকার পরিমাণ সবার ক্ষেত্রে সমান হয়না কেউ বেশি পরিমাণে টাকা পায় কেউ কম পায়। কি কারনে কেউ বেশি টাকা পায় এবং কেউ কম টাকা পায়?
২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Government of West) যখন কৃষক বন্ধু প্রকল্প চালু করেছিল তখন থেকেই জমি ভিত্তিক টাকার পরিমান কম ও বেশি বিষয়টি চালু রয়েছে। তিনটি শ্রেণীতে এই টাকার পরিমাণ ভাগ হয়ে থাকে। যার যেরকম জমি সেই হিসেবে কৃষকদের এই টাকা দেওয়া হয়। তবে নূন্যতম একজন কৃষক বছরে ৪০০০ টাকা পেয়ে থাকে যা দুটি কিস্তিতে ভাগ হয়ে থাকে এবং সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা পেয়ে থাকে যা দুটি কিস্তিতে ভাগ হয় অর্থাৎ পাঁচ হাজার টাকা করে।
কৃষক বন্ধুতে কত জমিতে কত টাকা? Krishak Bandhu Payment
কৃষক বন্ধুতে কত জমিতে কত টাকা পাওয়া যায়, এই বিষয়টি জানার আগে আপনাকে জানতে হবে কত পরিমান জমি দিয়ে আপনি কৃষক বন্ধু থেকে টাকা পাচ্ছেন সেটি জানার জন্য কৃষক বন্ধু স্ট্যাটাস চেক করতে হবে।
প্রথমে, কৃষক বন্ধুর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট যেতে হবে https://www.krishakbandhu.net/
এরপর নথিভুক্ত কৃষকের তথ্যের উপর ক্লিক করবেন পরবর্তী পেজে সিলেক্ট অপশন আসবে, সেখানে ভোটার কার্ড/আধার কার্ড/ব্যাংক একাউন্ট/কৃষক বন্ধু আইডি/মোবাইল নম্বর বা একনলেজমেন্ট নম্বর যেকোনো একটি সিলেক্ট করে সেই আইডি নম্বরটি নিচে দিয়ে চেকবক্সে ক্লিক করে search এ ক্লিক করবেন।
পরবর্তী পেজে কৃষক বন্ধু আইডি থেকে শুরু করে কৃষকের নাম সবকিছুই দেখতে পারবেন, সেখানে একটি অপশন থাকবে টোটাল ল্যান্ড (Total Land in acre) সেটি হচ্ছে আপনার জমির পরিমাণ।
এই জমির পরিমাণটি দিয়ে বর্তমানে আপনাকে জানতে হবে কত টাকা পাবেন। প্রথমেই বলা হয়েছে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ হয়ে থাকে কৃষক বন্ধুর টাকার পরিমান।
- প্রাথমিক শ্রেণী- জমি ০.০১ একর(Acre) থেকে ০.৪০ একর(Acre)
- মধ্যম শ্রেণি- জমি ০.৪১ একর থেকে ০.৯৯ একর
- সর্বোচ্চ শ্রেণী- জমি ১.০ একর থেকে ১.০১ একর বা তার বেশি।
প্রাথমিক শ্রেণী এর মধ্যে জমি থাকলে সবাই বছরে ৪০০০ টাকা পাবে অর্থাৎ ২০০০ টাকা করে একটি কিস্তি।
মধ্যম শ্রেণি এর মধ্যে জমি থাকলে প্রতি ডেসিমেল ১০০ টাকা করে বছরে। অর্থাৎ একটি কিস্তিতে প্রতি ডেসিমেল ৫০ টাকা করে।
একটি কিস্তির হিসেবে বের করতে হলে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের স্ট্যাটাসে যে জমির পরিমাণ থাকবে তার সাথে ১০০ গুন করতে হবে এবং এরপর সেই গুণফল এর সাথে ৫০ গুন করতে হবে, সর্বশেষ যা গুনফল আসবে সেই পরিমাণ টাকা একটি কিস্তিতে আপনি পাবেন। উদাহরণ- (কৃষকবন্ধু স্ট্যাটাসে জমি ০.৫৬ একর থাকলে টাকা পাবেন একটি কিস্তিতে→(০.৫৬×১০০)=৫৬, (৫৬×৫০)= ২৮০০ (টাকা) যা বছরে হবে ৫৬০০ টাকা।
সর্বোচ্চ শ্রেণী এর মধ্যে জমি থাকলে সবাই বছরে ১০,০০০ টাকা করে পাবে অর্থাৎ ৫০০০ টাকা করে একটি কিস্তি।
কৃষক বন্ধুর টাকা কবে দেবে? Krishak Bandhu Taka Kobe Dibe
কৃষক বন্ধু থেকে বছরে দু’বার টাকা দেওয়া হয় একটি খরিফ সিজনে ও আরেকটি রবি সিজনে। ইতিমধ্যে চলতি বছরে জুন মাসে কৃষকদের খরিফ সিজনের টাকা ব্যাংকে এসেছে কিন্তু রবি সিজনের টাকা এখনো পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। সরকারের তরফে খরিফ সিজনের টাকা (Krishak Bandhu Payment) কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে পাঠানো হয় এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এবং রবি সিজনের টাকা পাঠানো হয় অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে।
বর্তমানে রবি সিজনের আওতাধীন কৃষকেরা রয়েছে। এই কিস্তি বা সিজনের টাকা বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে ডিসেম্বর মাসের কোন এক তারিখে সরকারের তরফে দেওয়া হয়েছে। তবে এ বছরও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সেই টাকা দেওয়া হতে পারে এই ধরনের খবর উঠে আসছে। তবে অফিশিয়াল তারিখ সরকারের তরফে ঘোষণা করা হবে যখনই অফিসিয়াল তারিখ চলে আসবে পরবর্তী কোনো প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনাদের জানিয়ে দেবো এর জন্য অবশ্যই আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হয়ে যাবেন যার লিংক উপরেই পেয়ে যাবেন।
কৃষক বন্ধু প্রকল্প সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর জেনে নিন (FAQ)
প্রশ্ন: কৃষক বন্ধু টাকা কবে ঢুকবে? (Krishak Bandhu Payment Date)
উত্তর: কৃষক বন্ধু থেকে বছরে দুবার টাকা দেওয়া হয় একটি খরিফ সিজনের যা এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ও অন্যটি রবি সিজনের অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে। খরিফ সিজনের টাকা ইতিমধ্যে ব্যাংক একাউন্টে কৃষকদের চলে গেছে, এখন রবি সিজনের টাকা ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই পাওয়ার সম্ভাবনা উঠে আসছে।
প্রশ্ন: কৃষক বন্ধু কত জমিতে কত টাকা? How much money does Krishak Bandhu pay for how much land?
উত্তর: কৃষক বন্ধুতে ন্যূনতম জমি থাকলেও ৪ হাজার টাকা পাওয়া যায় বছরে এবং সর্বোচ্চ জমি থাকলে ১০০০০ টাকা বছরে পাওয়া যায়। মধ্যম শ্রেণীতে জমি থাকলে আনুপাতিক হারে টাকা পাওয়া যায়।
প্রশ্ন: কৃষক বন্ধুর টাকা কিভাবে চেক করা যাবে?
উত্তর: কৃষক বন্ধুর স্ট্যাটাস চেক করার জন্য কৃষক বন্ধুর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://www.krishakbandhu.net/ ভিজিট করে, নথিভুক্ত কৃষকের তথ্যের উপর ক্লিক করতে হবে। সেখানে ভোটার কার্ড/আধার কার্ড/ব্যাংক পাশবুক যে কোন মাধ্যমে স্ট্যাটাস শো হয়ে যাবে। ট্রানজেকশন স্ট্যাটাসের ঘরে দেখতে হবে ট্রানজেকশন সাকসেস আছে কিনা যদি থাকে সেক্ষেত্রে ব্যাংক একাউন্টে কৃষকের টাকা ঢুকে গেছে।
প্রশ্ন: কৃষক বন্ধু প্রকল্প কি?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৯ সালে কৃষকদের সুবিধার্থে কৃষক বন্ধু প্রকল্প চালু করেছে। বছরে দুটি কিস্তিতে কৃষকেরা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেয়ে থাকে। খরিফ সিজন ও রবি সিজনে এই টাকা দেওয়া হয় সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে।
প্রশ্ন: কৃষক বন্ধু বেনিফিশিয়ারি লিস্ট কি? Krishak Bandhu beneficiary list
উত্তর: কৃষক বন্ধুতে বেনিফিসারি লিস্ট অনলাইন চেক করা যায় না তবে কৃষক বন্ধুতে আবেদন থাকলে স্ট্যাটাস চেক করা যায় যা উপরে বর্ণিত রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ কৃষক বন্ধু প্রকল্পে অনলাইন আবেদন শুরু এবং ২ লক্ষ টাকার সুবিধা দিচ্ছে 👈👈👈
আরো পড়ুন: কৃষকবন্ধু টাকা কবে ঢুকবে ২০২৪ পরবর্তী কিস্তির তারিখ👈👈👈
আরো পড়ুন: কোন কোন কৃষক বন্ধুরা ফসলের ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন এখনই জেনে নিন👈👈👈
Krishakbandhu Website: Click
Krishak Bandhu Status Check: Click here