Krishak Bandhu Taka Kobe Dibe: পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের জন্য পূজার পরেই সুখবর আসতে চলেছে। বাংলার চাষী ভাইদের কৃষি কাজের সুবিধার্থে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (West Bengal Government) জনপ্রিয় প্রকল্প কৃষক বন্ধু প্রকল্পের(Krishak Bandhu Parkala) টাকা দেওয়ার কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হচ্ছে। বাংলার কৃষক ভাইয়েরা বছরে দুবার কৃষক বন্ধু প্রকল্প থেকে টাকা ব্যাংক একাউন্টে (Krishak Bandhu Payment) সরাসরি পেয়ে থাকে। ইতিমধ্যে ২০২৪ সালে প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছে লক্ষাধিক কৃষক এখন পরবর্তী কিস্তির জন্য অপেক্ষা করছেন তারা তবে খুব শীঘ্রই সেই টাকা ব্যাংক একাউন্টে আসতে চলেছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee) ২০১৯ সালে কৃষকদের কৃষিকাজে সার থেকে শুরু করে যাবতীয় সরঞ্জাম কেনার জন্য ও কৃষি ক্ষেত্রকে উন্নতির লক্ষ্যে কৃষক বন্ধু প্রকল্প চালু করেছেন। এই প্রকল্পের ব্যাপকতা বেশ কয়েকটি রাজ্যতে সারা ফেলেছে। মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যতেও এরকম একটি প্রকল্প চালু রয়েছে। এই প্রকল্প থেকে প্রতি বছরই দু’বার কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে টাকা আসে। একটি খরিফ মরশুমে এবং আরেকটি রবি মরশুমে।
চলতি বছরে ইতিমধ্যে খরিফ মরসুমের টাকা কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে চলে এসেছে, এখন পালা রবি মরশুমের। খুব শীঘ্রই এই টাকাও ব্যাঙ্ক একাউন্টে চলে আসবে এ নিয়ে সুখবর দিতে চলেছে কৃষি দপ্তর। আজকের এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনে নেব পরবর্তী কিস্তির টাকা আপনাদের কবে ব্যাংক একাউন্টে আসতে পারে।
প্রতিবছরে দুটি কিস্তিতে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা পাওয়া যায় এই প্রকল্প থেকে। একবার আবেদন করলেই প্রতি বছর এই সুবিধা পাওয়া যায়। বছরে দুটি কিস্তিতে ভাগ করে এই টাকা দেওয়া হয়, জমির পরিমাণ হিসেবে কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে এই টাকা আসে। আজকের এই প্রতিবেদনে জেনে নেব আপনি কত টাকা পাবেন সেটা কিভাবে বুঝবেন। তাছাড়াও টাকা পাওয়ার আগে কোন কোন বিষয়ে আপনাকে জেনে নিতে হবে। কোন কোন ভুলগুলো থাকলে আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা আসবে না বিস্তারিত জানার জন্য প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকা কবে দেওয়া হয়? (Krishak Bandhu Payment date)
কৃষক বন্ধু প্রকল্পে বছরে দুবার টাকা দেওয়া হয় (Krishak Bandhu Payment)। একটি খারিফ মরসুমের শুরুতে এবং আরেকটি রবি মরশুমের শুরুতে। একটি করে কিস্তিতে সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা করে পাওয়া যায়। এখন আমরা জেনে নিচ্ছি দুটি মরশুমের টাকা কোন কোন মাসের মধ্যে দেওয়া হয়।
- খরিফ মরশুমের টাকা কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে পাঠানো হয় বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে।
- রবি মরশুমের টাকা কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে আসে অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে।
- তাছাড়াও বছরের যেকোনো সময়ের মধ্যে পেন্ডিং বা ফেইল্ড হওয়া কিস্তির টাকা সরকার দিয়ে থাকে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সুবিধা?
Krishak Bandhu Payment
মূলত জমির পরিমাণ হিসাবে তিনটি ভাগে কৃষকদের ব্যাঙ্ক একাউন্টে এই টাকা পাঠানো হয়। ন্যূনতম জমি থেকে যদি ০.৪০ একর পর্যন্ত জমি থাকে সেক্ষেত্রে একটি পরিমাণ টাকা পাওয়া যায়। দ্বিতীয়ত ০.৪১ একর থেকে ০.৯৯ একর পর্যন্ত যদি জমি থাকে সেখানেও একটি পরিমাণ টাকা পাওয়া যায়। তৃতীয়ত, ১ একর বা তার বেশি যদি জমি থাকে সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কিস্তির টাকা পাওয়া যায়।
- যদি আপনার জমির পরিমাণ ন্যূনতম থেকে ০.৪০ একর পর্যন্ত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে একটি কিস্তিতে ২০০০ টাকা পাবেন কৃষক বন্ধু প্রকল্প থেকে এবং বছরে যা হবে (২০০০+২০০০)=৪০০০ টাকা।
- যদি আপনার জমির পরিমাণ ০.৪১ একর থেকে ০.৯৯ একর হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আনুপাতিক হারে টাকা পাবেন। বর্তমান হিসেবে একটি কিস্তিতে জমির একরের পরিমাণ যা থাকবে তার সাথে ৫০ গুন করে দিলে যে গুণফল হবে সেই টাকাই পাবে উপভোক্তা একটি কিস্তিতে। ধরুন আপনার জমি ০.৪৬ একর এক্ষেত্রে আপনি টাকা পাবেন একটি কিস্তিতে (০.৪৬×৫০)=২৩০০ টাকা। তাহলে বছরে পাবেন ২৩০০+২৩০০=৪৬০০ টাকা। এই হিসেবটি বজায় থাকবে ০.৪১ একর জমি থেকে ০.৯৯ একর জমির পরিমাণ পর্যন্ত।
- সর্বশেষ যদি জমির পরিমাণ ১ একর বা তার বেশি থাকে সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কৃষক বন্ধু প্রকল্পে একটি কিস্তিতে ৫০০০ টাকা পাবে উপভোক্তা। অর্থাৎ বছরে (৫০০০+৫০০০)=১০,০০০ টাকা ব্যাংক একাউন্টে আসবে উক্ত কৃষকের।
- তাছাড়াও কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আর্থিক উপরুক্ত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও যদি কোন কৃষক ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে মারা যায় যেকোনো কারণেই, তাহলে সেই পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়ে থাকে। এর জন্য উপভোক্তার মৃত্যুর কয়েক দিনের মধ্যে কৃষি দপ্তর অফিসে যোগাযোগ করতে হয়।
কিভাবে কৃষক বন্ধু প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করাবেন?
Krishak Bandhu Form Fill Up
কৃষক বন্ধু প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করণ খুবই সহজ করা হয়েছে। কিছুদিন আগেই অনলাইন একটি পোর্টাল চালুর খবর পাওয়া যাচ্ছিল তবে সেটা এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি আপাতত অফলাইনে ফর্ম পূরণ করতে হবে (Krishak Bandhu Form Fill up)। ব্লকের কৃষি দপ্তর অফিসে নির্দিষ্ট ফর্ম পাওয়া যায়, সেই ফর্মটি পূরণ করে যাবতীয় কাগজপত্র সহকারে কৃষি দপ্তর অফিসেই জমা করতে হবে।
কৃষক বন্ধু প্রকল্প আবেদন করতে কি কি কাগজপত্র লাগে? Krishak Bandhu Form Fill Up Document List
- কৃষকের নিজস্ব ভোটার কার্ড।
- আধার কার্ড।
- ব্যাংকের পাসবুকের প্রথম পাতার ছবি অথবা ক্যান্সেল চেক।
- সক্রিয় একটি মোবাইল নম্বর যা ফর্ম পূরণের সময় প্রয়োজন রয়েছে।
- পাসপোর্ট মাপের রঙিন ছবি।
- যে ব্যক্তি আবেদন করবে সেই ব্যক্তিকে উপস্থিত থাকতে হবে কৃষি দপ্তর অফিসে।
- দলিল/খতিয়ান/পর্চা বা ভাগচাষী হলে সেই সংক্রান্ত কাগজ।
আরো পড়ুন:-কৃষক বন্ধু প্রকল্পে অনলাইন আবেদন শুরু এবং ২ লক্ষ টাকার সুবিধা দিচ্ছে দেখুন👈👈👈
কারা কারা কৃষকবন্ধু প্রকল্পে আবেদন করতে পারবে?
পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী যেকোন কৃষকই এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবে। ভাগ চাষী, বর্গাদার, নিজস্ব জমি, পাট্টাদার সকল প্রকার জমির উপভোক্তাই এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করাতে পারবে।
কৃষকবন্ধু প্রকল্পের স্ট্যাটাস কিভাবে চেক করবেন? Krishak Bandhu Status Check Online
স্ট্যাটাস ৬টি মাধ্যমে চেক করতে পারবেন অনলাইন। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাংক একাউন্ট, KB id, মোবাইল নম্বর ও একনলেজমেন্ট নম্বর মাধ্যমে।
- প্রথমেই কৃষক বন্ধু প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://krishakbandhu.net/ এ যাবেন।
- এরপর নথিভুক্ত কৃষকের তথ্যের উপরে ক্লিক করবেন সেখানে সেলক্ট একটি অপশন পাবেন।
- তারপর সেখানে ৬ টি অপশন খুলে যাবে। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাংক একাউন্ট, kb id ও মোবাইল নম্বর এবং একনলেজমেন্ট নম্বর (যা ফর্ম পূরণের পর পাবেন)।
- এরপর যে মাধ্যমে চেক করতে চাইছেন সেটি সিলেক্ট করে নেবেন। নিচেই সেই আইডি নম্বরটি বসিয়ে দিতে হবে এবং নির্দিষ্ট চেকবক্সে ক্লিক করে search এ ক্লিক করবেন।
- তারপর সম্পূর্ণ স্ট্যাটাটি শো হবে প্রথমেই Akd আইডি নম্বর পাবেন এরপর kb আইডি পরপর দেখতে পারবেন ভোটার কার্ড নম্বর, আধার কার্ড নম্বর, কৃষকের নাম এবং সম্পূর্ণ ঠিকানা।
- কতগুলো জমি দিয়ে আবেদন করেছেন সেটাও থাকবে Status একটি ঘর পাবেন সেখানে যদি নতুন আবেদন করে থাকেন Pending পাবেন এবং যদি আপনার আবেদনটি সম্পন্ন হয়ে থাকে Approved লেখাটি দেখতে পারবেন। এরপর ট্রানজেকশন স্ট্যাটাস বলে একটি ঘর থাকবে সেখানে প্রত্যেক কিস্তির আগে কিছু আপডেট আসবে।
কৃষক বন্ধু স্ট্যাটাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়? Krishak Bandhu Taka Kobe Dibe
স্ট্যাটাস চেক করতে গিয়ে যদি No data Found শো হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে বুঝবেন এখনো পর্যন্ত অনলাইন আপনার নামটি এন্ট্রি করা হয়নি আবারও আপনি কৃষি দপ্তর অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। যদি স্ট্যাটাস শো হয়ে যাওয়ার পর Status ঘরে Pending থাকে এক্ষেত্রেও আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে কিছুদিনের মধ্যে সেটা Approved হয়ে যাবে যদি আপনার কাগজপত্র সঠিক থাকে এবং যদি কাগজপত্রের কোন ভুল থাকে সেক্ষেত্র Rejected হতে পারে পরবর্তীতে ব্লকের কৃষি দপ্তর অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
স্ট্যাটাসে কি লেখা আসলে টাকা পাবেনা?
স্ট্যাটাস চেক করে দেখে নেবেন কিছু পরিবর্তন এসেছে কিনা Transaction Status ঘরে। তার আগেও দেখে নেবেন Status ঘরে যাতে এপ্রুভ (Approved) লেখাটি থাকে। ট্রানজেকশন স্ট্যাটাসের ঘরে টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলে Ada Uploaded আসবে এরপর DDA Approved ও অবশেষে Account Valid তারপরই ব্যাংক একাউন্টে টাকা ঢুকবে। ব্যাংক একাউন্টে টাকা চলে আসলে ট্রানজেকশন সাকসেস লেখাটি চলে আসবে।
কৃষক বন্ধুর পরবর্তী কিস্তির টাকা কবে দেবে? Krishak Bandhu Payment date
প্রতিবেদনের শুরুতেই জানিয়েছি কৃষক বন্ধু (krishak bandhu taka) থেকে প্রতিবছর দু’বার টাকা দেওয়া হয়। একটি খারিফ সিজনের শুরুতে এবং আরেকটি রবি সিজনের শুরুতে ইতিমধ্যে খরিফ সিজনের টাকা জুন মাসে কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে চলে এসেছে এখন রবি সিজনের টাকা আসবে।
যদি আমরা দেখি কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ২০১৯ সাল থেকে কৃষকদের দুটি মরশুমে যে টাকা দেওয়া হচ্ছে তাতে বেশিরভাগ সময় খরিফ সিজনের টাকা জুন মাসেই সরকার দিয়েছে। এবং রবি সিজনের টাকা ডিসেম্বর মাসে বেশিরভাগ সময় দেওয়া হয়েছে।
খরিফ সিজনের টাকা দেওয়ার সময়সীমা এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এবং রবি সিজনের টাকা দেওয়ার সময়সীমা অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে। এখন রবি সিজনের মধ্যেই রয়েছে কৃষকেরা। রবি সিজনের টাকা দেওয়ার অফিসিয়াল তারিখ এখনো পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়নি তবে খুব শীঘ্রই তা প্রকাশিত হয়ে যাবে।
গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি জেনে নিন, যখনই টাকা দেওয়ার প্রসেস শুরু হয়ে যাবে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের স্ট্যাটাস চেক করলে ট্রানজেকশন স্ট্যাটাসের(Transaction Status) ঘরে আপনারা পরিবর্তন দেখতে পারবেন। প্রথমত ফাঁকা চলে আসবে এরপর Ada Uploaded,Dda approved, Account Valid এই পরিবর্তনগুলো আসতে থাকবে। যখনই ট্রানজেকশন স্ট্যাটাস এর ঘর ফাঁকা হয়ে যাবে বুঝে নেবেন সেই কিস্তি দেওয়ার প্রসেস শুরু হয়ে গেছে।
তবে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের (Krishak bandhu Installment) ২০২৪ সালের রবি সিজনের টাকা দেওয়ার সম্ভাবনা ডিসেম্বর মাসেই উঠে আসছে। এখনো পর্যন্ত অফিসিয়াল ভাবে ঘোষণা করা হয়নি। যখনই অফিসিয়াল ভাবে প্রকাশিত হয়ে যাবে কত তারিখ আপনাদের ব্যাঙ্ক একাউন্টে সেই টাকা আসবে অবশ্যই পরবর্তী কোনো প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা জানিয়ে দেবো। প্রতিবেদনের শুরুতেই আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপের লিংক দেওয়া রয়েছে সেখানে জয়েন হয়ে যাবেন পরবর্তী আপডেট মিস না করার জন্য।
Krishak Bandhu Website:- Click
Krishak Bandhu Status Check:- Click
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের হেল্পলাইন নম্বর:- Click
আরো পড়ুন:- কৃষক বন্ধু প্রকল্পে অনলাইন আবেদন শুরু এবং ২ লক্ষ টাকার সুবিধা দিচ্ছে দেখুন👈👈👈
আরো পড়ুন:-বাড়ির টাকা সবাই পাবেন তবে বাড়ি পেতে দিতে হবে মুচলিকা সঙ্গে দিচ্ছে UDIN নম্বর👈👈👈