Bangla Sasya Bima: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Government of West Bengal) কৃষকদের জন্য জনপ্রিয় প্রকল্প গুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলা শস্য বীমা (Bangla Sasya Bima) বা BSB এই প্রকল্প থেকে প্রতিবছরই লক্ষাধিক কৃষক উপকৃত হয়ে থাকে। কৃষকদের শেষ আশা জোগান দেওয়ার অন্যতম প্রকল্প এটি। বাংলা শস্য বীমা নিয়ে পুজোর মুখেই বড় ঘোষণা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) প্রতিবছরের মত এ বছরও লক্ষাধিক কৃষক(Farmer) টাকা পেতে চলেছেন। এবারে বর্ষা সিজনে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের বেশকিছু জেলাতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যার প্রভাব এখনো পর্যন্ত কেটে উঠতে পারেনি সেই সব জেলার মানুষেরা,মানুষ থেকে শুরু করে গবাদি পশু সবকিছুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সরজমিনে খতিয়ে দেখেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তবে কৃষি প্রধান রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবারের এই বন্যাতে যা দেখেছে গোটা দেশবাসী। মুখ্যমন্ত্রী বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গিয়েই কৃষকদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সবাই যাতে বাংলা শস্য বীমাতে নাম নথিভুক্ত করায়। কারণ বাংলা শস্য বীমাতে নাম নথিভুক্ত থাকলে, ফসলের ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে কৃষকদের চলে যাবে। বাংলা শস্য বীমাতে বছরে ২ বার নাম নথিভুক্ত করাতে হয় একটি খরিফ মরশুমে এবং আরেকটি রবি মরশুমে। বর্তমানে খরিফ মরশুমে আবেদন চলছে তবে সেই আবেদনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে ৩১ তারিখ পর্যন্ত। কৃষকদের জন্য সুখবর এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করাতে তাদের এক টাকাও খরচ হয় না পুরো প্রিমিয়ামের খরচ রাজ্য সরকার(Government of West Bengal)দিয়ে থাকে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতার কি ঘোষণা? (Mamata Banerjee)
উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলাতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যার প্রভাব এখনো পর্যন্ত খরিফ মরশুমের ফসলের উপর রয়েছে তবে আশার আলো দেখাচ্ছে বাংলা শস্য বীমা। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও বারংবার বিভিন্ন সভা মঞ্চ থেকে বলে আসছেন কৃষকদের বাংলা শস্য বীমাতে নাম নথিভুক্ত করাতে, কারণ বর্তমানে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে হঠাৎই বন্যা ও খরা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে যার প্রভাব পড়ছে মাঠের ফসলে। বিভিন্ন সময় দেখা গেছে ফসল জমিতে লাগানোর আগেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অথবা ফসল লাগানোর পরপরই বন্যা অথবা খরাতে তা শেষ হয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় কৃষকদের হাতে কোন কিছুই করার থাকেনা। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা কৃষকদের সুবিধার্থে ফসলের ইন্সুরেন্স প্রকল্প চালু করেছেন যার নামই বাংলা শস্য বীমা(Bangla Sasya Bima)। ফসল নষ্ট হয়ে গেলেই কৃষকদের ক্ষতিপূরণ মিলবে ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি এই প্রকল্পের মাধ্যমে। প্রতিবছরই লক্ষাধিক কৃষক বাংলা শস্য বীমা থেকে টাকা পেয়ে আসছে। নিখরচায় কৃষকেরা এখানে নাম নথিভুক্ত করাতে পারে, এক টাকাও খরচ হবে না কৃষকদের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা এবারের বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন, ৩১ই অক্টোবর পর্যন্ত বাংলা শস্য বীমাতে নাম নথিভুক্তকরনের সময় সীমা বাড়ানো হয়েছে এবং সকল কৃষকদের উদ্দেশ্যে জানিয়েছিলেন যাতে সবাই নাম নথিভুক্ত করে নেয়।
বাংলা শস্য বীমা তে কিভাবে নাম নথিভুক্ত করাবেন? (Bangla Sasya Bima Form Fill Up)
কৃষি দপ্তর অফিস অথবা ব্লক ভিত্তিক এজেন্ট তাদের সাথে যোগাযোগ করে, অফলাইনে ফর্ম পূরণ করে ব্লকের কৃষি দপ্তর অফিসে জমা করতে হবে। অফলাইন ফর্মটি পাবেন বাংলা শস্য বীমার এই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে- https://banglashasyabima.net/
বাংলা শস্য বীমাতে কারা নথিভুক্ত করাতে পারবে? (BSB apply)
যেকোনো কৃষকই বাংলা শস্য বীমাতে নাম নথিভুক্ত করাতে পারে। ভাগ চাষী, বর্গাদার, নিজস্ব জমি, ভাড়া নেওয়া জমি – সকল প্রকার জমির মালিকই এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবে। কৃষক যে জমি দিয়ে আবেদন করবে সেই জমিটি অবশ্যই চাষযোগ্য জমি হতে হবে।
বাংলা শস্য বীমাতে আবেদন করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে?(BSB Apply Document List)
- ব্যাংক পাস বইয়ের জেরক্স কপি।
- কৃষকের KYC নতি হিসেবে ভোটার আইডি কার্ড এবং আধার কার্ড।
- খতিয়ান/পর্চা (যা সাম্প্রতিকতম) বা পাট্টা বা দলিলের নকল (নিজস্ব জমির ক্ষেত্রে), নিজের নামে জমি না থাকলে অর্থাৎ ভাগচাষী হলে জমিতে চাষের অধিকার সংক্রান্ত শংসাপত্র যা গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃক প্রদান করা হয়ে থাকে।
- সংশ্লিষ্ট ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা বা তার প্রতিনিধি অথবা ভূমি ও ভূমি সংস্কার এবং উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরের খতিয়ান/পর্চা (যা সাম্প্রতিকতম) বা পাট্টা বা দলিলের নকল (নিজস্ব জমির ক্ষেত্রে), নিজের নামে জমি না থাকলে অর্থাৎ ভাগচাষী হলে জমিতে চাষের অধিকার সংক্রান্ত শংসাপত্র যা গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃক প্রদান করা হয়ে থাকেআধিকারিক বা পরিদর্শক দ্বারা প্রদত্ত ফসল রোপনের শংসাপত্র(যে ফসল চাষ করবেন তার শংসাপত্র) যা মধ্যস্থকারী অর্থাৎ এজেন্ট করে দেবে।
আরো পড়ুন:- বাংলা শস্য বীমাতে সম্পূর্ণ ফর্ম ফিলাপ ও ফর্ম ডাউনলোড করুন👈👈👈
(BSB Payment) বাংলা শস্য বীমা থেকে কত টাকা পাওয়া যায়?
স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বীমা সংস্থা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করে। কোনো এলাকায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি যে হারে হবে সেই হিসেবে কৃষকদের টাকা দেয় বীমা সংস্থা। ১০ শতাংশ, ২০ শতাংশ, ৫০ শতাংশ যে হিসেবে ক্ষতি হবে সেই হিসেবেই টাকা পাবে কৃষকেরা। সেই টাকাটি দেওয়া হবে প্রদত্ত ফসল তোলার সময় কালই অথবা একটু দেরিও হতে পারে।
বাংলা শস্য বীমার স্ট্যাটাস কিভাবে চেক করবেন? (Bangla Sasya Bima Status Check)
বাংলা শস্য বীমার স্ট্যাটাস চেক করতে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। https://banglashasyabima.net/এই ওয়েবসাইটে আসার পর Check Insurance Coverage একটি অপশন পাবেন সেখানে ক্লিক করবেন। এরপর সেখানে ভোটার কার্ড নম্বর দিতে হবে কৃষকের এবং কোন সিজনের স্ট্যাটাস দেখতে চাইছেন সেটি সিলেক্ট করে Check বাটনে ক্লিক করবেন। তাহলে নিচে সম্পূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসবে কত টাকা পাওয়ার জন্য আপনি যোগ্য, কত তারিখে আবেদন করেছেন, কতগুলো জমি দিয়ে আবেদন করেছেন, কোন ফসলের জন্য আবেদন করেছেন সবকিছুই দেখতে পারবেন।
আরো পড়ুন:- কৃষক বন্ধু প্রকল্পে অনলাইন আবেদন শুরু এবং ২ লক্ষ টাকার সুবিধা দিচ্ছে দেখুন👈👈👈
বাংলা শস্য বীমাতে আবেদন করেছেন তার সার্টিফিকেট কিভাবে পাবেন? (BSB Form Fill Up)
বাংলা শস্য বীমাতে আবেদন (BSB Form Fill Up) করার পর তার সার্টিফিকেটও ডাউনলোড করতে পারবেন অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে। https://banglashasyabima.net/ এই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আসার পর Farmer Corner সেখানে ক্লিক করে কৃষকের তথ্য দিয়ে সেই সার্টিফিকেটটি ডাউনলোড করতে হবে।
Bangla Sasya Bima (BSB) Official Website/ BSB Form Download:- Click
BSB Status Check:- Click